বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশে সবকিছুই এখন ইন্টানেট কেন্দ্রিক। আর তাই অনলাইনে ঘরে বসেই চাহিদামতো পণ্য বা সেবা পাওয়া যাচ্ছে। সেই সাথে করোনাকালীন সময়ে সারা বিশ্বে ইন্টারনেট নির্ভর ব্যবসা বহুগুণ বেড়েছে।
তবে এখানে অগ্রগতি যেমন লক্ষণীয়, ঠিক তেমনি কেনাকাটা করতে গিয়ে অনেকে প্রতারণার শিকার হওয়ার সংখ্যাটিও কম নয়। প্রায়ই দেখা যায়, অনলাইনে পণ্য অর্ডার দেয়ার পর আগাম অর্থ নিয়ে বিক্রেতা উধাও হয়ে গেছে অথবা যে মানের পণ্য অর্ডার দেওয়া হয়েছিল, তার চেয়ে নিম্নমানের পণ্য দেয়া হয়েছে।
অবাক করার মত তথ্য, দেশে এখন আনুমানিক ২ হাজারের বেশি ই-কমার্স সাইট রয়েছে। তাছাড়া ফেসবুকভিত্তিক বিভিন্ন ব্যবসায়িক উদ্যোগ রয়েছে দেড় লাখের বেশি।
চলমান কোভিড-১৯-এর লকডাউনে পণ্য ও সেবা সরবরাহে ই-কমার্সের ওপরই ভরসা রেখেছেন বেশিরভাগ ক্রেতা-বিক্রেতারা। কিন্তু খাতটির প্রবৃদ্ধির কারণে নতুন বেশকিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। ব্যাঙের ছাতার মতো বিপুলসংখ্যক ই-কমার্স গড়ে উঠায় ক্রেতারা অনেক সময়ই বুঝতে পারেন না, প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কোনটি আসলে বিশ্বাসযোগ্য।
এ অবস্থায় কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা অতীব জরুরী।
১. নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে ঢোকার আগে বানান এবং ডিজাইনের দিকে লক্ষ করতে হবে। চেক করতে হবে সঠিক ওয়েবসাইটে যাচ্ছেন কিনা। ওয়েব অ্যাড্রেসে http-এর সঙ্গে s যুক্ত থাকলে অর্থাৎ https থাকলেই কেবল এন্টার করবেন।
২. রিভিউ দেখে কিনুন
অনলাইন থেকে পণ্য কেনার আগে অবশ্যই সে পণ্যের এবং ওয়েবসাইটের রিভিউ দেখে নিতে হবে।খেয়াল রাখবেন রিভিউগুলো একদমই নতুন কি-না এবং রিভিউগুলো ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে কিনা।
৩. চটকদার বিজ্ঞাপন ও অস্বাভাবিক ছাড়।
প্রতারণার একটি বড় হাতিয়ার অস্বাভাবিক মূল্য ছাড় বা ক্যাশব্যাক অফার কিংবা অস্বাভাবিক কম দামে পণ্য বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের প্রলুব্ধ করা হয়। এমন বিজ্ঞাপন দেখলে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
৪. অ্যাডভান্স পেমেন্ট না করা।
প্রতিষ্ঠিত সাইট না হলে কিংবা প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে সন্তুষ্ট হওয়ার মতো স্পষ্ট ধারণা না পাওয়া গেলে অগ্রিম পেমেন্ট না করাই ভালো।
৫. অনলাইন কিংবা অফলাইনে প্রতারণার শিকার হলে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেওয়ানি আদালতে প্রয়োজনীয় প্রমাণাদিসহ ক্ষতিপূরণের মামলা করা যেতে পারে; ফৌজদারি আদালতে ৪২০ ধারার আওতায় প্রতারণার মামলা করা যেতে পারে।
এখানে দ্য সেলস অফ গুডস অ্যাক্টস-এর আওতায় প্রতিকার পাওয়া যায়।
৬. ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ:
প্রতারণার শিকার হলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করাটাই বর্তমানে সবচেয়ে কার্যকরী পন্থা। সাইট বা গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগটি লিখিত আকারে ক্রয়ের রসিদসহ যাবতীয় তথ্য সংযুক্ত করে ভোক্তা অধিকার কার্যালয়ে ফ্যাক্স বা ই-মেইলে দিতে হবে।