আলমডাঙ্গার জামজামি ইউপির প্রথম ( প্রেসিডেন্ড) চেয়ারম্যান খন্দকার আবু তৈয়বের আদরের ছোটো খোকা ঐতিহ্যের ধারক সম্রাট আলমগীর পরম অভিমানে, শ্বাসজনিত কষ্ট রোগেভুগে চিকিৎসাবিহীণই পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে একমাত্র সন্তান মাতৃহারা মনিপের সাথে কোনো রকম পানি খাবার খেয়ে যার যার কামরায় ঘুমিয়ে যান। আজ ভোরে বাবার কামরায় গিয়ে তাকে অসার – নিঃশব্দ বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে, ছেলে মনিপ আব্বুকে ডেকে ও আর ঘুম ভাঙ্গেনী। তার কাঁন্নায় প্রতিবেশিরা এ বাড়িতে ছুটে আসেন। দেখে শুনে তিনি মারা গেছেন বলে জানান। ( ইন্নালিল্লহি ওয়া… রাজেউন ) মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৭১ বছর।সম্রাট আলমগীরের বাবা ছিলেন, বৃটিশ আমলে ঘোষিত ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম চেয়ারম্যান খন্দকার আবু তৈয়ব। তাঁর ছোটো ছেলে তো সম্রাটই নাকি সাধারণ ঘরের ছেলে ভাববেন! বাবার অঢেল সম্পদ – সম্পত্তি। সে সময়ের অথ্যাত ৬০’র দশকের ব্যাচেলর অব আর্টস পাশ আদুরে ছেলে আলমগীর । চাকুরীতে যাননি। পিতার পূর্ব,পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিন,বন্দে জমি পিতার মৃত্যুর পর তাকে অঘোষিত জমিদার করে তোলে। পাশের বাড়ির টুকটুকে সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করে তাক লাগিয়ে দেন গ্রামবাসীকে। স্বামী- স্ত্রীর আদরের সন্তান মনিপ জন্ম গ্রহন করে । কাঙ্খিত সুখের সংসারে অনিশ্চিত রাহুগ্রাস। একাকী জীবন। সম্পদ বিক্রির হিড়িক । নিজে ও অন্য ভাইদের সম্পদ বিক্রির প্রতিযোগিতা। আর ঘরে বসে নিষ্কর্মা রাজকীয় জীবনধারা তাকে শুন্যের কোঁঠায় এনে ঠেকায়। পাঠক এতটাই দারিদ্রতা দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের লাইন থেকে দু’লাইন পিছনে নিয়ে তোলে। তদুপরি চলার স্ট্রাট্যাস ছিলো একই রকম । পাঠক কথায় আছে হাতি সব পরিস্থিতিতেই লাখ টাকা দাম। মুখ অভাবে পান্ডুর মত দেখালেও শার্টের ভাজ আয়রন সব সময়ই ছিলো ।
সেই অঘোষিত জমিদাররুপি সম্রাট আলমগীর ক্ষূদায়, বিনা চিকিৎসায় নিজ ঘরে মরে পড়ে থাকলো । আমরা কি জবাব দেবো আমাদের বিবেককে ? পশুপাখিকে মানুষ খেতে দেয় ; আর দুটো মানুষ একজন অসুস্থ একজন মানসিক প্রতিবন্ধি, এদের বাড়ি ঘেঁসা লাখোপতি কোটিপতি এই ঈদে কি তাঁরা কি পশু কুরবানী দেবেন !মেম্বর রজন মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান জুম্মার নামাজ পরে নিজ গ্রামে পারিবারিক গোরস্তানে তার বাবার কবরের পাশেই দাফন হবে।