তিন দেশের হয়ে লিগ জিতেছেন। মহাদেশ-সেরাও হয়েছেন দুই মহাদেশে গিয়ে। এর মধ্যে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে রোনালদো-রামোস-বেনজেমাদের সঙ্গে হ্যাটট্রিক ‘ইউরোপ-সেরা’ হওয়ার পেছনেও তাঁর বড় অবদান। এখন আছেন পিএসজির মূল গোলরক্ষক হিসেবে।
নিঃসন্দেহে তাই বলা যায়, জিততে কেমন লাগে, কেইলর নাভাস বেশ ভালোভাবেই জানেন। জয়ক্ষুধা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই মোটেও। সেই নাভাসকে নিয়েই যদি প্রশ্ন ওঠে, তিনি জিততে চান না, ইচ্ছা করে ম্যাচ হেরে যান— ভ্রু কুঁচকে ওঠাই স্বাভাবিক। সেটাই হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, নিজের জাতীয় দলের হয়ে ইচ্ছে করে ম্যাচ হেরেছেন এই সাবেক রিয়াল গোলকিপার। শুধু তিনিই নন, এই ‘কর্মে’ সঙ্গী হিসেবে আরও বেশ কয়েকজনকে পেয়েছিলেন। কিন্তু কেন এই কাজ করেছিলেন নাভাসরা? এখানেই উঠে এসেছে হিংসা-দ্বেষ ও পছন্দ-অপছন্দের বিষয়গুলো। মাঠে ফুটবল খেলতে নেমে সবাই তো জিততেই চায়। কিন্তু কখনো কখনো মাঠের জয়-পরাজয় ছাপিয়ে যদি ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব-হিংসা কিংবা পছন্দ-অপছন্দ প্রধান হয়ে দাঁড়ায়। সেটাই হয়েছে নাভাসদের ব্যাপারেও। বলা হচ্ছে, দলের সাবেক কোচ হোর্হে লুইস পিন্তোর সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়ে গিয়েছিল কোস্টারিকার তারকা খেলোয়াড়দের। ড্রেসিংরুমের নেতৃত্বে ছিলেন কেয়লর নাভাস, ফুলহাম ও স্পোর্তিং লিসবনের সাবেক স্ট্রাইকার ব্রায়ান লুইজ ও স্প্যানিশ ক্লাব দেপোর্তিভো লা করুনিয়ার মিডফিল্ডার সেলসো বোর্গেস। তাঁরা আবার দলের সাবেক পরিচালকদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা ঠুকে দিয়েছেন। তারই শুনানিতে নাভাসের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন বোর্ডের সাবেক সভাপতি এদুয়ার্দো লি। জানিয়েছেন, কোচের নিয়োগে নাভাসদের মতামতের গুরুত্ব দিতে হতো। সেটি না হলে নিয়োগ পাওয়া কোচকে দায়িত্ব থেকে সরানোর জন্য অনেক কিছুই করতেন নাভাসরা।
ঠিক কী করতেন? সেটা জানাতে গিয়েই চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছেন লি, ‘সাবেক কোচ হোর্হে লুইস পিন্তোর চুক্তিতে একটা শর্ত ছিল। সেখানে বলা ছিল, তারা যদি টানা তিন ম্যাচ হারে, তাহলে কোচকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। নাভাসরা এই শর্ত সম্পর্কে জানত। তারা চাইত না, পিন্তো দলের দায়িত্বে থাকুক। নাভাসই সবাইকে গিয়ে বলেছে, চলো আমরা তিনটা ম্যাচ হেরে যাই!’
শুধু লি-ই নন, নাভাসদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন কোস্টারিকা ফুটবল ফেডারেশনের সাবেক পরিচালক রাফায়েল ভার্গাসও। ২০১১ সাল থেকে ২০১৪ পর্যন্ত দলের দায়িত্বে ছিলেন পিন্তো। বেশ সফল সময়ই কাটিয়েছিলেন। ২০১৪ বিশ্বকাপে ইতালি, ইংল্যান্ড ও উরুগুয়ের গ্রুপে থেকেও দলটা যে চমক দেখিয়েছিল, সেটাও এই পিন্তোর অধীনেই। ২০১৪ সালে কনক্যাকাফ অঞ্চলের সেরা কোচও নির্বাচিত হয়েছিলেন এই পিন্তো। ভার্গাসের মতে, সুখের সময় বেশি দিন টেকেনি। সে বিশ্বকাপের পরপরই নাভাসদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায় এই কোচের।
আজ শুনানিতে নিজের বয়ান দিতে আসবেন পিন্তো। দেখা যাক, নাভাসদের বিপক্ষে আর কী কী বের হয়!