প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার ঘর পাওয়া উপকারভোগীদের সাথে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের চাওয়া-পাওয়া ও সমস্যা নিয়ে এক উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার এগারোটার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের বক্তারপুর বাবুর হাটখলা নামক স্থানে নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০ জন উপকারভোগীরা কেমন জীবনযাপন করছেন তা জানতে এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নে ভবিষ্যত কর্মকান্ড নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এ উঠান বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, উপজেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর , উপজেলা সমবায় অধিদপ্তর , উপজেলা পল্লী উন্নয়ন ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সরেজমিনে আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে উপকারভোগীদের সাথে মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে এ উঠান বৈঠক করে থাকেন।
এই সময় উপকারভোগীরা জানান, বর্তমানে তারা পানির সমস্যায় রয়েছেন, উপযুক্ত মেয়েরা থাকায় ভেতর গোছলখানার ব্যবস্থা করে দিলে ভালো হয়। ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থা , পয়ঃনিষ্কাশণের জন্য বড় পরিসরে হাউজের ব্যবস্থা এবং আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থার করলে তারা আরামে ও স্বাচ্ছন্দ্যভাবে জীবনযাপন করতে পারবেন। তাদের সকল সমস্যা পর্যায়ক্রমে সমাধান করে একটি উপযুক্ত বাসযোগ্য পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছেন বলে উপকারভোগীদের উপস্থিত সংশ্লিষ্টরা তাদের আশ্বস্ত করেন।
উপজেলা মহিলাবিষষয়ক অফিসার শাহানাজ আক্তার বলেন, আপনাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করাবেন। ছেলেমেয়েদের আঠার বছরের নিচে বিয়ে দিতে পারবেন না। মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর মেয়েদের আত্মনির্ভরশীল করতে বিভিন্ন প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা রয়েছে। করোনার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিবো। প্রশিক্ষণের পর তাদের আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে সুন্দর জীবন গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
উপজেলা সমবায় অফিসার মির্জা ফারজানা শারমিন বলেন, আপনাদের সঞ্চয়ী হতে হবে। আপনারা সবাই মিলে একটি সমিতি করবেন। সেখানে সঞ্চয় রেখে মূলধন থেকে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ বা কৃষি কাজ করে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পথ সুগম করবেন।
উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার ইসরাত জাহান বলেন, সরকার আপনাদের থাকার ঘর দিয়েছেন। ঘর এর আশেপাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন। ছেলেমেয়েদের উপযুক্ত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন। আমার দপ্তরের পক্ষ থেকে যা করণীয় তা অবশ্যই করবো।
উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার মোহাম্মদ জহির উদ্দিন বলেন, আপনাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপহার স্বরূপ ঘর দিয়েছেন । এই ঘর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব আপনাদের । আপনাদের ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। আপনারা সবাই মিলেমিশে থাকবেন। এখানে আপনারা সবাই একে অপরের আপন জন। আপনাদের সমস্যার কথা শুনলাম তা সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে। একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে, সরকার আরোও অনেক কিছু করে দিবেন।
কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের বক্তারপুর বাজার হতে পূর্বদিকে ৩ মিনিটের পথ হাঁটলে বাবুর হাটখোলা দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ ঘেরা এলাকায় নির্মিত হয়েছে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ২০টি ঘর। প্রকৃতির সৌন্দর্য বিস্তৃন পরিবেশের ছোঁয়া লেগেছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো। কালীগঞ্জ উপজেলায় ২য় পর্যায়ে বরাদ্দকৃত ভূমিহীন,গৃহহীন,ছিন্নমূল,অসহায়, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ২০টি পরিবার পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দুই শতাংশ জমির উপর নির্মিত দুই কক্ষবিশিষ্ট টয়লেট ও রান্নাঘরসহ একটি করে ঘর। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ২য় পর্যায়ে বরাদ্দকৃত গৃহের উপকারভোগী দিনমজুর, লরিচালক,ভ্যানচালক, ঝিয়ের কাজে সম্পৃক্ত, কাঠমিন্ত্রী, আয়া, ফুসকা বিক্রেতা, সাইকেল মেকানিক, কৃষি কাজে সম্পৃক্ত ও অটোরিকশা চালক ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গৃহ প্রদান নীতিমালা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরূপ তাদের মাঝে এই ঘরগুলো প্রদান করা হয়েছে। গৃহ প্রদান নীতিমালা অনুযায়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সংশ্লিষ্টদেও যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ২০ জন উপকারভোগীরা পেয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর।
ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা বিনির্মানে মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গত ২০ জুন উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে ২০ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে জমিসহ ঘরের যাবতীয় কাগজপত্র উপকারভোগীদের হাতে তুলে দেন আওয়ামীলীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি এমপি।