Àদামুড়হুদা উপজেলায় যোগদানের পর আমার কাছে মোছাঃ ফাতেমা খাতুন(৩৭), খান পাড়া, দামুড়হুদা আকুল আর্তি জানায় একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যানের। সে জানায় ১২ বছর পূর্বে তার স্বামী তাকে তালাক দেয়, ৯ বছর যাবত সে ভ্যান চালিয়ে মুড়ি চানাচুর বিক্রি করে কোন রকম দিন কাটাচ্ছে।বোনের সংসারে আশ্রিত ফাতেমার হাজারো যন্ত্রণা বুকে চেপে একমাত্র সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করার সংগ্রামের একমাত্র সঙ্গী প্যাডেল ভ্যান। কিন্তু শরীর তো আর পেরে ওঠে না। কৃশকায় শরীরে একজন নারী হয়ে এভাবে ভ্যান চালানো যেন তার কাছে অসম্ভব মনে হতো। সে নাকি অনেকের কাছে একটা ব্যাটারিচালিত ভ্যান চেয়েছে একাধিকবার। বেশ এক্সপেনসিভ হওয়ায় সে নিজেও ক্রয় করতে পারেনি আবার কারো কাছ থেকে ম্যানেজও করতে পারেনি।
ফাতেমার ছোট্ট আব্দার ব্যাটারিচালিত ভ্যান পেলে তার সব কষ্ট লাঘব হয়ে যাবে। আজ সব ব্যস্ততা ঝেড়ে ফেলে ফাতেমাকে নিয়ে ভেবেছি। অনূভব করতে চেয়েছি তার হৃদয়ের কষ্ট। নিজে একজন নারী হিসেবে আরেকজন নারীর পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যয় থেকেই আজ তাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান দেওয়া হলো।
নারীর ক্ষমতায়ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারমূলক কার্যক্রম। এভাবে যদি অসহায় নারীদের পাশে দাঁড়ানো যায়, তবে সকলের প্রচেষ্টায় একদিন আমরা সকলের অসহায়ত্ব মোচনের সুযোগ পাবো।
দীর্ঘ ৯ বছর পরে এত কাঙ্খিত উপহার পেয়ে আজ ফাতেমার অসহায় চোখে যে আনন্দের ঝিলিক দেখেছি, তার আবেগআপ্লুত প্রকাশ দেখেছি এটা আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া। ফাতেমার জীবন সংগ্রাম দেখে অনেক নারী উৎসাহিত হবে। ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখবে। আর ফাতেমার মতো সংগ্রামী নারীর সংগ্রামের মধ্য দিয়েই একদিন রচিত হবে বাংলাদেশের সাফল্যগাঁথা।