1. rana.bdpress@gmail.com : admin :
  2. admin@dailychandpurjamin.com : mazharul islam : mazharul islam
  3. rmctvnews@gmail.com : adminbd :
বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কলমাকান্দা উপজেলা জামায়াত আমীরের সুস্থতা কামনায় দোয়া নেত্রকোণার -কেন্দুয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আহত ৫ জন ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে……এহসানুল মাহবুব জুবায়ের নাগরিক সমাজ সংগঠনের উদ্যোগে ১১’শ তাল বীজ রোপণ ভারতে পালানোর সময় সীমান্তে নওগাঁর সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী গ্রেপ্তার লামায় লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে সিএনজি সমিতির সদস্যরা সানন্দবাড়ী সিনিয়র মাদরাসা অধ্যক্ষর দূনীতির তদন্ত নোয়াখালীতে আশ্রয় কেন্দ্রে এক ব্যবসায়ীর উদ্যোগে প্রতিদিন তিন  হাজার মানুষের খাবার আয়োজন ভূরুঙ্গামারীর পাগলারহাটে ছাত্রলীগ ছাত্রদলের সংঘর্ষে ১১ নেতাকর্মী আহত নান্দাইল মডেল প্রেস ক্লাবের উপদেষ্টা লিয়াকত হোসেন লিটন’র মৃত্যুতে সাংবাদিকদের শোক প্রস্তাব

দিরাই শাল্লায় ২৮ বছর যাবত সুনামে নৌকা চালাচ্ছে তিলক বৈষ্ণব

ছোট বেলা থেকে বড় ভাইদের সাথে লাইনের নাও ( যাত্রী যাতায়াতের নৌকা) চালাই। আগে নাওয়ের পানি ফালানি, পুটপরমাশ করতাম। পরে ভাইয়েরা নাও চালানি বাদ দিছে, কিন্তু আমি নাও চালাইতাছি। উক্ত কথাগুলো বলেন সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার চরনারচর থেকে শাল্লা উপজেলার প্রতাপপুর পর্যন্ত নৌ রুটের নৌ চালক বৃহস্পতি বৈষ্ণব ওরফে তিলক। রবিবার প্রতাপপুর থেকে নিজ বাড়ি শাল্লার নওয়াগাঁও যাওয়ার জন্য পুর্বের ন্যায় তার নৌকায় উটি। ঠিক ২ টায় প্রতাপপুর থেকে যাত্রীবাহি নৌকা ছেড়ে চরনারচর অভিমুখে যাত্রা শুরু করি। প্রখর গরম থাকায় নৌকার উপরে যাই। আমাকে দেখে নৌকার চালক তিলক বৈষ্ণব ৃবলছে, আরে সাংবাদিক দাদা যে ছাতী (ছাতা) আইনচওই না? উত্তর না বলায় সে তার হাতের ছাতাটি আমার দিয়ে বলেন বইন (বসা) আমার লগে (পাশে)।
তার পর শুরু হয় তিলক বৈষ্ণবের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলোচনা। বেড়িয়ে আসে তার জীবনের বহু অজানা ঘটনা। নৌকা চালিয়ে কেমন আয় হয় বলতেই তিনি বলেন দাদা এখন খুব একটা ভাল না। ২৮ বছর ধরে এই লাইনে আমি নাও চালাই। এলাকায় আমার নাও রে সবাই কয় নাইওড়ির নাও। আমার নাওয়ে দিরাই শাল্লার প্রায় ১৬ টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। বহু মা বোন তাদের বাবা বাড়ি, কেউ স্বামীর বাড়ি, আবার অনেকেই মেয়ে বাড়ি যায় । এই জন্য আমার নাওরে নাইওড়ির নাও হিসেবে সাবাই চিনে। আয় না হলে নৌকা কেন চালান, উত্তরে তিলক বৈষ্ণব বলেন কি করবো বহুদিন যাবত এই রাস্তায় নৌকা চালাইতে চালাইতে প্রত্যেক গ্রামের মানুষের সঙ্গে আমার ভাল সম্পর্ক হয়েছে।

বহু মা বোনের কাছে আমার ফোন নাম্বার আছে। তারা ফোন দিয়ে বলবেন দাদা কোন সময় আইবায়, আমার লইয়া যাইও। এই সম্পর্কে আটকা পরে আছি বলেই এখন ও আছি লাইনে। এলাকার সবাই আমায় খুব বিশ্বাস করে, আমিও ২৮ বছর যাবত এই সুনাম ধরে আছি। কেউ বলতে পারবেনা টাকার জন্য আমি কোন যাত্রী কে নাও থাইক্যা লামাইয়া দিছি। আমি স্কুল, কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের এমনি আনি, তাদের মনে চাইলে টাকা দেয়, না দিলেও কিছু বলিনা। এর কারণ কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাদা আমি লেখা পড়া করছি না। এখন বুঝি পড়া লেখার কি মান, এর লাগি তারারে আমার সাধ্য মত এই নাও ভাড়াটা না নিয়ে একটু সাহস দেই আর বলি তোমরা বড় হও লেখা পড়া করে। এর জন্য আমি না হয় কয়ডা টেকা ( টাকা) নাই নিলাম। তারাই তো এক দিন দেশের সম্পদ হবে। তার মুখ থেকে এসব কথা শুনে খুব ভাল লাগলো। এর পর তিনি জানান তার একটি ছেলে ও একটি মেয়ে আছে। এইচ এস সি পাশের পর গত বছর মেয়েটিকে
বিয়ে দিয়েছেন এবং একমাত্র ছেলে তপু বৈষ্ণব জিপিএ A পেয়ে এইচ এস সি পাশ করছে দিরাই সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে। সে বলে দাদা এই নৌকা দিয়াই কিছু জমি করছি,সন্তানদের লেখা পড়া করাইতেছি, একটা নিজের নাও বানাইছি। যে নৌকা দিয়ে এই লাইন চলে সেটি তার নিজের নৌকা বলে সে জানায়। তিনি জানান এলাকার মানুষদের না দেখলে আমার ভাল লাগেনা। আয় হোক আর না হোক যতদিন পরি এই রুটে নৌকা চালিয়ে যাওয়া আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
দীর্ঘ ২৮ বছর যাবত চরনারচর থেকে বায়া শ্যামারচর হয়ে প্রতাপপুর পর্যন্ত নৌকা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। প্রায় ১৬ মাইলের এই নৌ রুটে যে সব গ্রাম রয়েছে সেগুলো হল চরনারচর, থেকে শুরু হয়ে দুর্গাপুর, লসিমপুর, কার্তিকপুর,আলীপুর,শ্যামারচর বাজার, পেরুয়া, দাউদপুর,উজানগাঁও, জয়পুর, নিয়ামতপুর, রামপুর,আনন্দপুর, নওয়াগাঁও, হরিনগর,আঙ্গারুয়া, সখলাইন, বাহাড়া নয়া হাটি, বাজার হাটি, রঘুুনাথপুর, বাগের হাটি, যাত্রাপুর,সহ অনেকগুলো গ্রাম।
এনিয়ে আনন্দপুর গ্রামের শহীদ মিয়া জানান, ছোট থাকতেই দেখতাছি তিলক দা এই রাস্তায় নৌকা চালায়। তার ব্যবহার খুব ভাল। তার নৌকা দিয়ে মহিলারা চলাচল করলে কোন রকমের অসুবিধা হয় না। সে খুব বিশ্বাসী হয়ে গেছে আমাদের এলাকায়।
পাশে রামপুর গ্রামের কৃপেশ দাস বলেন চরনারচরের নৌকারে আমরা নাইওড়ির নৌকা বলি। বহুদিন যাবত একেই রুটে নৌকা চালিয়ে সে সবার প্রিয় হয়ে গেছে।
শাল্লা সদরের এক সময়ের ইজারাদ মধু মিয়া বলেন, তিকল দার ব্যবহারে তার নৌকার জন্য যাত্রীরা অপেক্ষা করতো। এখন ও মাঝে মাঝে তার সঙ্গে দেখা হলে খুব ভাল আচরণ করে। তার সুনাম আছে এলাকায়।
বর্তমান ইজারাদার মহাদেব দাস বলেন, তিলক বৈষ্ণব বহুদিন ধরে নৌকা চালায়, তার বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। আসলে সে খুব ভাল। তার সময়ের অনেকেই এখন নৌকা চালায়না। সে এখনও সুনামের সহিত নৌকা চালিয়ে যাচ্ছে।

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2021 rmcnewsbd
Theme Developed BY Desig Host BD