২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সের প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় মেধাক্রমে ২৩১২ তম হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন ময়মনসিংহের নান্দাইলের কৃষকের মেয়ে তাসলিমা আক্তার। এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণের ফলাফল ঘোষণার পর তাসলিমা আক্তারের পরিবার ও পলাশিয়া গ্রামজুড়ে বইছে খুশির বন্যা।
তাসলিমা উপজেলার বীরবেতাগৈর ইউনিয়নের পলাশিয়া গ্রামের মো. মাইজ উদ্দিন ও হেলেনা দম্পতির মেয়ে। তিন সন্তানের মধ্যে তাসলিমা সবার ছোট।
অদম্য ইচ্ছাশক্তিই সফলতার পথ দেখিয়েছে তাসলিমা আক্তারকে। শিক্ষাজীবন জুড়েই আর্থিক দুশ্চিন্তা ছিল তাসলিমার নিত্যসঙ্গী। মেধার জোরে সব বাধা জয় করে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি।তাসলিমা ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী। প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে সাফল্যের সাথে উর্ত্তীণ হয়েছে।
মেধাকে কেউ আটকাতে পারে না তার উজ্জল দৃষ্টান্ত হল তাসলিমা আক্তার। মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় গর্বিত তার বিদ্যাপীঠ, শিক্ষক ও এলাকার লোকজন।
নান্দাইলের বীরকামট খালী জে.বি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় তাসলিমা আক্তার।
জে.বি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল হাকিম বলেন, তাসলিমা ছোটবেলা থেকেই মেধাবী। সে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় বৃত্তিসহ গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে সাফল্যের সাথে উর্ত্তীণ হয়েছে।
তিন ভাইবোনের মধ্যে তাসলিমার বড় ভাই ফয়সাল আহমেদ বিএসসি ইইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যয়নরত, বড়বোন মাহমুদা আক্তার মিতু এমএসসি পাশ করে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তাসলিমার বাবা একজন কৃষক। কৃষি কাজের পাশাপাশি বীরকামট খালী দক্ষিণ বাজারে তার রয়েছে ছোট কাপড়ের দোকান। কষ্টে উপার্জিত অর্থে কোনরকম চলে তার সংসার। বহু কষ্ট করে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করিয়েছেন তিনি।তাসলিমা আক্তারের বি.এ পাশ পিতা মো. মাইজ উদ্দিন ও মা হেলেনা আক্তার বলেন, আল্লাহর অশেষ রহমত ও শিক্ষকদের সহযোগীতায় আমাদের সন্তান ভাল ফল করতে পেরেছে। এ জন্যে মহান আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করছি।ফল প্রকাশের পর থেকেই আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে শিক্ষক, সহপাঠী ও এলাকাবাসীর শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন তাসলিমা আক্তার। এতে আপ্লুত তার বাবা-মা। তাসলিমার মা হেলেনা আক্তার বলেন,আমার মেয়ে মানবিক চিকিৎসক হোক, এটিই আমার চাওয়া।
তাসলিমা আক্তার বলেন, এই সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান আমার মায়ের। ডাক্তার হয়ে দেশের মানুষের সেবা করতে চাই। আমি সকলের দোয়া প্রার্থী।