আজ আমি বাবা হারা, পায়ের নিচে মাটি নেই, মাথার উপর ছাদ নেই
নেই ভরদুপুরে খর রোদে ক্লান্ত শরীর শান্ত করার সেই বটছায়া,
আমি ক্লান্ত, বিরক্ত বয়সের চেয়ে ওজন চাপ মাথার উপর অতিরিক্ত
বাসায় খাবার ব্যবস্থা আছে, ঘুমানোর জন্য ভালো বিছানা আছে
আছে পকেটে টাকাও, আত্মীয় আছে স্বজন আছে, শুধু ভরসা নেই।
বোঝ আছে বুদ্ধি আছে, শুধু নেই বুঝিয়ে দেবার কেউ
কোন অভাব নেই তবুও মনে হয় আমার যেতে হতভাগা, অভাগা দুনিয়াতে দ্বিতীয়টি নেই।
রেখে যাওয়া সম্পদ আছে, চলার মত দুটো পা আছে হাত আছে, শুধু দিক-নির্দেশনার সেই মানুষটি নেই।
চিৎকার করার শক্তি আছে, চোখের জল আসার মুহূর্ত আছে
গলা ফাটিয়ে চিৎকার করি, চোখের জল আসে, কিন্তু মুছে দেবার কেউ নেই,
আজও বাবা অসুস্থ হই, ব্যাথা পাই, কপালপুরে গা গরম হয়ে উত্তাপ ছড়ায়,
কিন্তু মাথায় হাত দিবার কেউ নেই, ঔষধ খাওয়ানো কেউ নেই।
বাবা জানো আজও ঈদ আসে যায় বায়না ধরব কার কাছে?
আজ যদি আমার কিছুই কেনা হয় ,খোজ নেবার কেউ নেই
আজ কেউ বলে না, ফোন দাও এত রাত হল কেন বাসায় আসেনি
আজ কেউ বলে না, ওর একটু খাইয়ে এসো নয়তো করবে বাহানা।
তোমার বায়না ধরা ছেলেটা আজও তেমনি আছে
একচুল বদলায়নি তার স্বভাব, শুধু বাবা বায়না পূরণের তুমার অভাব।
আগলে রাখার কেউ নেই বাবা, সম্পর্কের অবক্ষয়
আদর আল্লাহদ দূর বহুদূর, ভুল ধরাতে রয়
দায়িত্বের বার এতই কঠিন, পাহাড় সমান বোঝা
সবার মনের মতন হওয়া বল এতো কি আর সোজা।
অস্তিত্বের আবরণ শুধুই মায়াজাল
আজ আছি ভালো সবাই, কাল মন্দ গাল
সুখের সময় আসলে পরে, আনন্দ ময় রাশি রাশি
দুঃখের সময় জায়গো বোঝা কত ভালোবাসি।
বাবা তোমার বলা শেষ কথাটি জায়গো পড়ে মনে
শেষ নির্দেশিকার মাঝেই খুঁজি বেঁচে থাকার মানে,
“তুমি বড় বড় দায়িত্ব অনেক বড়, সংসার অনেক কঠিন
সৎ ভাবে চলো সৎ পথে চলো আল্লাহ তোমাকে ঠেকাবে না”!
তুমি নেই অসহায় কতটা আমি বুঝি,
সুপ্রভাত দিনরাত প্রতিখন তোমার মাঝেই বাঁচি
কায়া বিহীন ছায়া হয়ে মাথায় রেখো হাত
নয়তো তোমার পাগল ছেলের সকাল গুলো হয়না সুপ্রভাত।
তোমার পাগল হয়তো একদিন যাবে বাবা মরে
যদি তোমার আশীর্বাদের হাতটা যায় সরে,
দুঃখ কষ্টের মাঝে ও বাবা কায়া বিহীন ছায়া
তোমার দেওয়া পথ ভুললে আমায় যেও নিয়া।
লেখক খান সজিব