1. rana.bdpress@gmail.com : admin :
  2. admin@dailychandpurjamin.com : mazharul islam : mazharul islam
  3. rmctvnews@gmail.com : adminbd :
সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
শাল্লায় শ্রীশ্রী জগন্নাথ জিউর আখড়ায় দায়িত্বরত সেবাইতকে মহন্ত টিকা প্রদান স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর আলম খালিয়াজুরীতে মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর, আহত ৭ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন বর্তমান এমপি তুহিন রাঙ্গাঝিরি মোঃ ইউনুছ চৌঃ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জ ১ আসনে চমক দেখালেন রঞ্জিত সরকার তাজরীন ট্রাজেডির ১১ বছর: নিহতদের প্রতি বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধা বাঁশের ব্রীজই এখন এলাকাবাসীর ভরসা চাটখিলে সিনিয়র সাংবাদিক দিদার উল আলম-কে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে সভা দুর্যোগে হাটি রক্ষা ও পারিবারিক পুষ্টি কার্যক্রম এর উপকরণ বিতরণ

রক্তের বিনিময়ে সার্বভৌম রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ

রক্তের বিনিময়ে সার্বভৌম রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ

১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের মানচিত্রে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিয়েছিল একটি ভূখন্ড, যার নাম বাংলাদেশ। সবুজ জমিনে রক্তিম সূর্যখচিত মানচিত্রের এ দেশটির স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী আজ। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর এ দিনটি বাংলাদেশের ¯্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর বছরও। এর সাথে আর একটি নতুন পালক যোগ হয়েছে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জাতিসংঘের চুড়ান্ত সুপারিশ।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ির’ দেশ আখ্যা দেয়া হয়েছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে দারিদ্র্য আর দুর্যোগের বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পথে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ আর্থসামাজিক প্রতিটি সূচকে এগিয়েছে বাংলাদেশ। এ প্রাপ্তি নিয়েই এবার জাতি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জাতি মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করবে।
একাত্তরের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাঙালিদের উপর অতর্কিত হামলা চালালে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন। এই ঘোষণা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত হয়। ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তানি সেনারা বাঙালি বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল সকল রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা।
সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের আগে বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যে কোন মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। মুহূর্তের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা ওয়্যারলেসের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়। সেই সময় বাস্তবতা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার এই ঘোষণা নথি সংরক্ষণ করা সম্ভব ছিল না। পরবর্তী সময়ে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিল পত্র তৃতীয় খন্ডে বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের এই ঘোষণা উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয় ২৫ মার্চ মধ্য রাতের পর অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে এ ঘোষণা দেন তিনি। যা তৎকালীন ইপিআর এর ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পরে। পরে চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ ও ২৭ মার্চ বেশ কয়েকজন শেখ মুজিবের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার মূল্যবান দলিলটি সেখানে লিপিবদ্ধ হয়েছে এভাবে ‘ইহাই হয়তো আমাদের শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাইতেছি যে, যে যেখানে আছে, যাহার যাহা কিছু আছে, তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও, সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও। শেখ মুজিবুর রহমান। ২৬ মার্চ, ১৯৭১।’
২৫শে মার্চের রাত পোহালে, ২৬শে মার্চের যে দিন আসে, ঢাকার সবখানে সেদিন আগুন জ্বলছিল। ইয়াহিয়া খান, টিক্কা খান আর খাদিম হুসেইন রাজার নির্দেশে ব্যারাক থেকে বের হওয়া পাকসেনারা ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব ধরনের বাঙালি নিধনে লিপ্ত হয়। ঢাকা এবং দেশের সর্বত্র তারা হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। জগন্নাথ হলের ছাত্রদের নৃশংসভাবে যাকে যেখানে পাওয়া গেছে হত্যা করা হয়েছে। তেমনি সেখানের বরেণ্য শিক্ষকদেরও। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকে চূর্ণবিচূর্ণ করে গুড়িয়ে দেয়া হয় গোলার আঘাতে। একই দশা করা হয়েছিল রেসকোর্স ময়দানের কালী মন্দিরকে। শহরে কারফিউ জারি করা হয়, ফলে সেনারা নির্বিঘেœ এলোপাতাড়ি গুলি করে হত্যা চালিয় যেতে থাকে। এই দৃশ্যই পরবর্তীতে সারাদেশ জুড়ে পুনরাবৃত হতে থাকে। নারকীয় মধ্যযুগ শুরু হয় সারাদেশে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আর তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আল শামস গণহত্যা, গণধর্ষণ ও নির্মম নিপীড়ন চালাতে থাকে। ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যার মুখে দাঁড়িয়েও বাঙালির প্রতিরোধ তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে। ২৬ মার্চ সূচনা হয়েছিল বাঙালির সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের। পাকিস্তানি শোষকের হাত থেকে প্রিয় মাতৃভূমিকে স্বাধীন করতে রণাঙ্গনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলার দামাল ছেলেরা। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে বিপুল অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তান সেনাবাহিনী শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে থাকে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি বাহিনী। ৩০ লাখ মানুষের রক্ত আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বিশ্ব মানচিত্রে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ ঘটে। ‘রক্তের আখরে’ নতুন একটি দেশের নাম লেখা হলো- ‘বাংলাদেশ’।

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2021 rmcnewsbd
Theme Developed BY Desig Host BD