সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় মামনুল হককের অনুসারীকর্তৃক দল বেঁধে হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত নোয়াগাঁও গ্রামবাসীকে সহমর্মিতা দেখাতে আসে গৌর একাত্মতা যজ্ঞ যাত্রা সিলেট বিভাগের নেতৃবৃন্দ।
ভাব কিশোর গোস্বামী বাবাজীর নেতৃত্বে সিলেট, সুনামগঞ্জ, দিরাই, জগন্নাথপুর ও শাল্লারসহ বহু সনাতন ধর্মপ্রাণ ভক্তবৃন্দ শুক্রবার বেলা ১১ টায় নোয়াগাঁওয়ে উপস্থিত ছিলেন।
এসময় আগত সকলেই গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারের খোঁজ খবর নেন।
গোস্বামী ভাব কিশোর বাবাজী বলেন যে কোন ধর্মে সহিংসতা গ্রহন করে না। যারা ধর্মকে বাজে কর্মে ব্যবহার করবে তাদের কোন ভাবেই মঙ্গল হয়না। সনাতন ধর্ম কখনো পরহিংসার পক্ষে নয় বরং সকলেরতরে মানবতা রক্ষার্থে সহমত পোষণ করে। বুঝে, না বুঝে কোন কাজই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা কখনো করেন না। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে জানান একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে নেয়াগাঁওয়ে যে ঘটনা ঘটেছে তা খুবই মর্মান্তিক। একটি বাগানে যেমন বহু প্রকার বৃক্ষ জন্ম নেয় তেমনি একটি দেশে বহু সম্প্রদায়ের বসবাস না হলে সুন্দর সমাজ গঠন হয়না । এক জাতের বৃক্ষ দিয়ে যেমন বাগান হয়না, তেমনি এক সম্প্রদায়ের লোকজন দিয়ে ও একটি দেশ হতে পারে না, সেখানে কম বেশি কয়েকটি সম্প্রদায় থাকা আবশ্যক অন্যতায় মানবতার বিপর্যয় হওয়ার সম্ভবনা থাকে বলে সকলকে সান্ত্বনা দেন তিনি। প্রসঙ্গত, গত ১৭ মার্চ সুনামগঞ্জের শাল্লা
উপজেলার হিন্দু অধ্যুষিত নওয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাস আপন নামের এক তরুণের ফেসবুক আইডি থেকে মাওলানা মামনুল হককে কটাক্ষ করে কথিত পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় নোয়াগাঁও গ্রামের ৮৮ টি বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুর করেছে। এসময় গ্রামের ৫ টি মন্দির ভাঙচুর করা হয়। এই ঘটনায় ১৮ মার্চ বৃহস্পতিবার থানায় দুটি পৃথক মামলা করা হয়। শাল্লা থানার এসআই আব্দুল করিম বাদী হয়ে ১৫০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা করেন। নওয়াগাঁও গ্রামবাসীর পক্ষে ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫০০ জন আসামী করে অন্য মামলাটি করেন স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নওয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল। দুইটি মামলায় ইতোপূর্বে গ্রেফতারকৃত ৩৮ আসামীর মধ্যে ২৯ আসামীকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
এদিকে ২২ মার্চ ঝুমনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছে। অন্যদিকে গত ১ এপ্রিল সেই অভিযুক্ত ঝুমনের মা নিভা রানী দাস বাদী হয়ে ৭২ জনকে আসামী করে আমল গ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাল্লা জোনের বিচারক শ্যাম কান্ত সিনহা’র আদালতে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।