সাতক্ষীরা জেলায় করোনা প্রকোপ বাড়ায় আবারও প্রশাসনের তৎপরতা বেড়েছে, তবুও মানুষের অবাধ চলাচল থামানো যাচ্ছে না। বর্তমানে করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে অনেক দেশই লকডাউন পন্থাকে বেছে নিয়েছে, বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।
নো মাস্ক, নো সার্ভিস,
নো মাস্ক, নো এন্ট্রি,
নো মাস্ক, নো সেল,
নো মাস্ক, নো টক।
এমন সব অভিনব উদ্যোগের পরেও করোনার উর্ধ্বমূখী যেন থামছেই না। জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মোস্তফা কামাল মহোদয়ের নির্দেশে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সেকেন্ড ওয়েভ মোকাবেলায় সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত কঠোর নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানার পরেও মানুষের ভিতরে তেমন কোন সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না। মহামারী করোনার উর্ধ্বগতি থেমে নেই এ জেলায়। করোনার সংক্রমন প্রাদুর্ভাব আর মৃত্যু সবই চলছে সমানতালে। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় করোনা যেন জেকে বসেছে। জেলা শহর হতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সর্বত্র, গ্রামে গ্রামে, ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি কাশি সহ করোনার উপসর্গ, সর্বত্র করোনা আতঙ্ক, কিন্তু বাস্তবতা হলো স্বাস্থ্য বিধি মানতে উদাসীনতা। জেলায় তৃতীয় দফার লকডাউন চলছে যা ১৭ জুন হতে শুরু হয়ে ২৪ জুন শেষ হবে। করোনা ভাইরাসের সর্বশেষ তথ্য ঃ গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষা ১৭৩ জন, আক্রান্ত ৬০ জন, মৃত্যু ০৯ জন, ২৪ ঘন্টায় শনাক্তের হার ৩৪.৬৮ %, এখানে মোট আক্রান্ত ৩০৫৫ জন, এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৯১ জনের ২৩ জুন, ২০২১ পর্যন্ত। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়ন্ত সরকার।
জনসাধারনের একটি অংশ লকডাউনের প্রতি সম্মান দেখাতে কৃপনতা করছেন, করোনা যুদ্ধে পূর্বের ন্যায় আবারও সম্মুখ সারিতে পুলিশ, সত্যিকার অর্থে সাতক্ষীরার বাস্তবতায় লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশী ভূমিকা পুলিশী তৎপরতা সময়পোযোগী। জনসাধারনের জান মালের পবিত্র আর রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তারা সর্বদা তৎপর। সাতক্ষীরা শহরের মোড়ে মোড়ে, মফস্বল এলাকার বাজার, সড়কে সর্বত্র করোনা যুদ্ধে পুলিশ মমত্বাবোধ, মানিবকতা আর দায়িত্ব কর্তব্য পালনের অনন্য দৃষ্টান্ত দেখিয়ে চলেছে পুলিশ প্রশাসন। সাতক্ষীরার সর্বত্র যখন করোনার হাতছানি, সংক্রমন আর মৃত্যুর সংখ্যায় প্রতিদিনই নতুন নতুন নাম যুক্ত হচ্ছে, লকডাউন বাস্তবায়নে এক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর গর্বিত সদস্যরা অদম্য দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম বার এক্ষেত্রে মডেল। তিনি নিজেই সড়কে অবস্থান নিয়ে লকডাউন বাস্তবায়নে দায়িত্ব পালন করছেন যা অধিনস্থ এবং সহকর্মী পুলিশ সদস্যদের মানবিক দায়িত্ব পালনে অধিকতর আগ্রহী করে তুলছে। সাতক্ষীরা শহরের প্রাণ কেন্দ্র গুলো জনশূন্য পাশাপাশি উপজেলা ভিত্তিক বড় বড় মোকামগুলোও পুলিশী তৎপরতায় লকডাউন বাস্তবায়ন হলেও যখনই পুলিশ সদস্যরা এক স্থান হতে অন্যস্থানে যাচ্ছেন তখনই সুযোগের সৎ ব্যবহার করছেন সাধারণ জনগণ, স্বাস্থ্য বিধি মানতে নারাজ তারা। সাতক্ষীরা সদর, তালা, কলারোয়া, দেবহাটায়, আশাশুনি,শ্যামনগরেও পুলিশী তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি এ জেলায় করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় জনপ্রতিনিধিরাও এগিয়ে এসেছেন। এক্ষেত্রে তালা উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাংবাদিক নজরুল ইসলাম, বর্তমান চেয়ারম্যান সরদার জাকির, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী ডাঃ আপতাব উদ্দিন এবং ০৭ নং ওয়ার্ডের টানা তিনবারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য জনাব এম এম মোশাররফ হোসেন, তারা জনগণকে করোনা ভাইরাস হতে সচেতন করতে বিভিন্ন প্রচারণার পাশাপাশি স্থানীয় বাজার, মসজিদ, মন্দিরে মাস্ক বিতরণ, ব্যক্তি উদ্যোগে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে আর্থিক সহযোগীতাও অব্যাহত রেখেছে।