সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা সদরের সড়কটি এমনিতেই
খানাখন্দে ভরা। সামান্য বৃষ্টিতেই সেখানে পানি জমে সৃষ্টি হয় দুর্ভোগ। কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সড়কে জমে থাকতো পানি। মাস কয়েক আগে সড়কের দক্ষিণ পাশ ধরে শুরু হয় একটি পাকা ড্রেন নির্মাণের কাজ। ড্রেন নির্মাণের জন্য প্রকল্প রেখা থেকে মাটি উত্তোলন করে ফেলা হয় সড়কেই। আর সড়কে সে মাটি রেখেই চলতে থাকে ড্রেন নির্মাণের কাজ। মাটি সরিয়ে কাজ করার জন্য স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে জানালেও কর্ণপাত করেনি তারা। সড়কে মাটি রেখেই পুরো কাজ বাস্তবায়ন করে। এতে করে সড়কের দুইপাশের ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। যানবাহন চলাচলে শুরু হয় দুর্ভোগ । তারপর আবার ডাকনা বিহীন খোলা ড্রেন ফেলে রাখা হয়। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা উঠলে ড্রেনের ওপর স্লাব (পাকা পাঠাতন) বসানো শুরু হয়। কিন্তু কোথাও কোথাও স্লাব নেই। ফলে ড্রেনের উপরিভাগ দিয়ে হেঁটে যেতে প্রায়ই উল্টে ড্রেনে পড়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। অন্যদিকে ড্রেনটিতে পানি প্রবেশের ছিদ্র সড়কের চেয়ে উঁচু হওয়ায় বৃষ্টির পানি সড়কেই থেকে যাচ্ছে। এতে করে সড়কটিতে দুর্ভোগের নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এমন দুর্ভোগের চিত্র চোখে পড়বে ধর্মপাশা উপজেলা সদর বাজারের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সড়কে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে উপজেলা শহর মাস্টার ল্যান প্রণয়ন ও মৌলিক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রল্পের (ইউটিএমআইডিপি) আওতায় ‘উপজেলা পরিষদ-ধর্মপাশা বাজার ভায়া শয়তানখালী খাল ইউড্রেন নির্মাণ’ কাজের জন্য ১ কোটি ৬৩ হাজার ১৭৬ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। আর কাজের জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয় ধর্মপাশার মধ্যনগরের মেসার্স সরকার এন্টারপ্রাইজকে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তর থেকে গেল বছরের নভেম্বর মাসে ১ হাজার মিটার দৈর্ঘ্যের এ ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে ধর্মপাশা বাজারের অভ্যন্তরে কাজ শুরু করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধর্মপাশা বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘ভেবেছিলাম বাজারের অভ্যন্তরে এ ড্রেন আমাদের উপকারে আসবে। কিন্তু এখন দেখছি ভোগান্তীই বেশি। দোকানের সামনের অংশে ড্রেন কোথাও কোথাও ফাঁকা থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।’
নিজেকে ঠিকাদারের ব্যবসায়ী অংশীদার দাবি করে এ কাজের তদারকীর দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ড্রেন পরিস্কারের জন্য মাঝে মধ্যে ফাঁকা রাখা হয়েছে। ড্রেনের দৈর্ঘ্য ১ হাজার মিটার কিন্তু স্লাব ধরা হয়েছে ৭০০ মিটার। তবে কাজে কোনো অনিয়ম করা হয়নি।’
মেসার্স সরকার এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার সুমন সরকার বলেন, ‘ম্যানুয়্যালে যেভাবে আছে সেভাবে কাজ করা হয়েছে। বাজারে গ্যাপ (ফাঁকা) থাকার কথা না। মনে হয় পরিস্কার করার জন্য গ্যাপ রাখা হয়েছে। যদি টুকটাক সমস্যা থাকে তাহলে তা ঠিক করে দেওয়া হবে।’
উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. আরিফ উল্লাহ খান বলেন, ‘ধর্মপাশা থানার সামনে থেকে কান্দাপাড়া পর্যন্ত সড়ক মেরামতের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। সড়কটি উচু হলে এ সমস্যা সমাধান হবে। যেখানে পানি জমছে সেখানের ড্রেনে ফুটো করে দেওয়া হচ্ছে। আর স্লাব নির্দিষ্ট করা আছে।