1. rana.bdpress@gmail.com : admin :
  2. admin@dailychandpurjamin.com : mazharul islam : mazharul islam
  3. rmctvnews@gmail.com : adminbd :
শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৮ অপরাহ্ন

স্কুল-কলেজ বন্ধ : স্মার্ট ফোনে ফ্রি ফায়ার পাবজী গেমের আসক্ত শিক্ষার্থীরা

মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘ মেয়াদী বন্ধের কবলে পড়েছে স্কুল-কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিল ছেড়ে আধুনিক স্মার্ট মোবাইলে ফ্রি ফায়ার ও পাবজী গেমের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। প্রাইমারি স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গেম খেলায় জড়িয়ে পড়ায় অভিভাবকদের বাধার মুখে পড়লেও তা খুব একটা কাজে আসছে না।

শুধু শহর নয়, জেলা-উপজেলার প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় এ দৃশ্য নিত্যকার। জেলার উপকূলীয় উপজেলা কেশবপুর উপজেলায় শিক্ষক ও অভিভাবকরা তাদের অভিযোগ তুলে ধরেছেন। পাড়া-মহল্লায় উঠতি বয়সী শিক্ষার্থীদের আড্ডা ও অনলাইন গেম খেলার দৃশ্য চোখের পড়ার মত।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এসব কর্মকান্ডের মধ্যে সৃষ্টি হতে পারে অপরাধের গ্যাং গ্রুপ। শিক্ষার্থীরা পড়াশুনার টেবিল ও খেলাধুলার মাঠ ছেড়ে ফেসবুক, ইউটিউব ও প্রযুক্তিভিত্তিক কর্মকান্ডে তাদের সময় পার করছে। ইমো, ভাইবার, টুইটার ও হোয়াটস আ্যাপে নতুন নতুন ছবি আপ ও চ্যাটিং করে সময় নষ্ট করে তৈরি করছে টিকটক ভিডিও। এই কাজে নারীরাও পিছিয়ে নেই। সারা দিন এমনকি রাত জেগে ইন্টারনেটে খেলছে ফাইটিং ফ্রি ফায়ার ও পাবজির মতো নেশা ধরা গেম। ইন্টারনেটের সহজলভ্যতাকে কাজে লাগিয়ে স্কুল কলেজ পড়ুয়া যুবক কিশোররা মোবাইলে এমনভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছে যা মাদকের চেয়ে ভয়ংকার। বিকালের সময় কেশবপুর উপজেলার অধিকাংশ অঞ্চলে দেখা গেছে কিশোররা ইন্টারনেটে ফ্রি ফায়ার গেম নিয়ে পড়ে আছে। যাদের বেশিরভাগই স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী।

এ বিষয় বিভিন্ন সূত্রে জানার পর সম্প্রতি উপজেলার একাধিক গ্রাম ঘুরে শিক্ষার্থীদের স্মার্ট মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে চায়ের দোকান, গাছতলা, রাস্তার পাশে ও মাঠের মধ্যে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। এছাড়া অনেক জায়গায় শিক্ষার্থীদের তিন থেকে পাঁচ জনে মিলে গেম খেলতে দেখা গেছে।

একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে গেম খেলা অবস্থায় কথা বললে তারা জানান, স্কুল বন্ধ তাই সময় কাটানোর জন্য ইন্টানেটে গেম খেলি। এ বিষয় অনেকে আরও বলেন, আমরা তো রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের মতো চাঁদাবাজি ও মারামারি করি না। সম্প্রতি এ ধরনের খেলা নিয়ে উপজেলার , পাত্রপাড়া,শিকারপুর,ভালুকঘর,বারুইহাটী,প্রতাপপুর, বুড়িহাটী, শ্রীরামপুর এলাকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হয়।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম এজন্য ব্যবহার করি, করোনা ভাইরাসের কারনে সারা বিশ্ব যেখানে থমকে আছে সেখানে আমাদের মতো ছাত্ররা কি করবে, সারা দিন তো আর ঘরে বসে সময় কাটাতে পারি না। স্কুল বন্ধ, কোচিং বন্ধ একা একা বাসাতে থাকাতে সময় যেন আর কাটে না, তাই অনলাইনে গেম ফ্রি ফায়ারে সবার সাথে যোগাযোগ করাসহ বিনোদনের সুযোগ পাচ্ছি।

গেম খেলায় ফোনে মেগাবাইট কিনতে খরচ সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, এই গেম যখন বিনোদন নেওয়ার জন্য খেলতাম তখন মাসে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মেগাবাইট কিনলে হত। মেগাবাইট ছাড়া অন্য কোন খরচ ছিল না। আস্তে আস্তে যখন এটার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ি তখন প্রতিটা ইভেন্টে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা খরচ না করলে যেন হয় না। গেমটিতে পুরোপুরিভাবে মনোযোগ দিয়ে যখন খেলি তখন দেখি গেমের ভিতরে এমন কিছু জিনিস আছে যে গুলো না কিনলে নয়। যেমন অলকের দাম ৪০০ টাকা, একটা জার্সি ৩০০ টাকা, নতুন ইভেন্টে আসলেই ২০০০ টাকার নিচে খরচ না করলে হয় না। সম্পূর্ণ ড্রেস কিনতে লাগে ১২০০ টাকা আর রেগুলোর কথা তো বাদই থাকে।

একাধিক অভিভাবকের সাথে কথা বললে অনেকেই বলেন, ‘অলস মস্তিস্কে শয়তানের বাসা বেঁধেছে’ কোমল মতি শিক্ষার্থীদের। এভাবে স্কুল কলেজ বন্ধ না রেখে সামাজিক দুরত্ব মেনে সপ্তাহে গ্রুপ আকারে ৩ দিন ক্লাস নেওয়া হলে এমন খেলা করার সময় পেত না অনেকেই। সে জন্য একাধিক অভিভাবক ক্লাস ভিত্তিক গ্রুপ করে সপ্তাহে দু’দিন ক্লাস করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নিকট। তারা আরও বলেন, স্কুল চালু করা না হলে গেম খেলার চেয়েও সামাজিক অপরাধে জড়িয়ে পড়বে সকল বয়সের শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, আমাদের সময় আমরা অবসর সময়টি বিভিন্ন খেলাধুলার মধ্যে দিয়ে পার করতাম, কিন্তু এখনকার যুগে তরুণ প্রজন্মের সন্তানদের দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। উপজেলার গ্রামগঞ্জে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রুপ গেম এখন মহামারি আকার ধারণ করছে। ইয়ং জেনারেশন এখন ফ্রি ফায়ারের দিকে আসক্ত। যেটা কিনা একটা অনলাইন গেম সেখানে গ্রুপিং এর মাধ্যমে জুয়ার আসর তৈরী হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও যথারীতি শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে অনলাইন গেমের প্রতি আসক্তি হচ্ছে।

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2021 rmcnewsbd
Theme Developed BY Desig Host BD